সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
পিরোজপুরে পানির ওপর সবজি চাষ

পিরোজপুরে পানির ওপর সবজি চাষ

পিরোজপুর প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরের নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায় প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘ধাপ চাষ’ নামে পরিচিত। পিরোজপুর ছাড়িয়ে এখন ঝালকাঠি, বরিশাল ও গোপালগঞ্জের বিলাঞ্চলে এমন চাষাবাদ দেখা যায়। নাজিরপুর উপজেলায় ২০০-২৫০ বছর আগে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি ও চারা উৎপাদন শুরু হয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এই চাষাবাদকে বিশ্ব কৃষি ঐতিহ্যভুক্ত করে। এর অংশ হিসেবে এটি ‘গ্লোবাল ইম্পর্টেন্ট অ্যাগ্রিকালচার হেরিটেজ সিস্টেম’ স্বীকৃতি পেয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিগ্বিজয় হাজরার দাবি, নাজিরপুরেই সর্বপ্রথম ভাসমান চাষাবাদ শুরু হয়। তখন এই নি¤œাঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে মানুষের কোনও কাজ ছিল না। শ্রমের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে জলজ আগাছা, কচুরিপানা, শ্যাওলা ও দুলালী লতা দিয়ে ভাসমান বেড তৈরি করা হতো। ধীরে ধীরে এর বিস্তৃতি ঘটেছে। স্বরূপকাঠী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চপল কৃষ্ণ নাথ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তাদের বলদিয়া ইউনিয়নের গগন, চামি, ডুবি ও বিন্না এলাকার ৬০ হেক্টর জমিতে সবজির চারা উৎপাদন হয় বেশি। নাজিরপুরে এখন ১২০ হেক্টর জমিতে সবজি, মসলা ও বিভিন্ন জাতের চারা উৎপাদন হয়। এর মধ্যে দেউলবাড়ী, কলারদোয়ানিয়া ও মালিখালীতে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ হয়। চাষাবাদের জন্য জুন মাস থেকে বেড ও দৌল্লা তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়।
ধাপ তৈরির পদ্ধতি
নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ী অঞ্চলের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রেমানন্দ হালদার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, কচুরিপানা আটকে স্তর স্তর করে পাঁচ ফুট উঁচু ও সাড়ে চার ফুট প্রস্থ রেখে ৪০-৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ধাপ তৈরি হয়। অনেক সময় ধাপের দৈর্ঘ্য বেশি হয়। চারজন লোক দুই দিনে একটি ধাপ তৈরি করতে পারেন। কয়েকদিন পর ধাপটি নরম হলে তার ওপর দৌল্লা বসানো হয়।
বল বা দৌল্লা বানানোর পদ্ধতি
টোপাপানা দুলালী লতা দিয়ে প্যাঁচিয়ে ছোট বল আকৃতির মতো তৈরি করেন কৃষকরা। দলা দলা করে বানানো হয় বলে এগুলোকে স্থানীয়ভাবে ‘ট্যামা’ বা ‘দৌল্লা’ বলা হয়। বলের মাঝখানে অংকুরোদগম বীজ বসিয়ে ছায়ায় রাখা হয়। বীজ ভিজিয়ে রাখলে পাঁচ থেকে সাতদিনে অংকুরোদগম হয়। পাতা বের হওয়ার পর দৌল্লাগুলো ধাপের ওপর রাখা হয়। বল বা দৌল্লা তৈরিতে অংশ নেন কৃষক পরিবারের নারীরা।
কলারদোয়ানিয়া এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আল আমিন রিজভী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ী-দোবড়া, কলারদোয়ানিয়া ও মালিখালী এবং নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা সারাবছর ৫-৮ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এ কারণে অধিকাংশ মানুষ ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
নাজিরপুরের মুগারঝোর কৃষি উন্নয়ন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মো. শামসুল আরেফিনের তথ্যানুযায়ী, ভাসমান চাষাবাদে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে অন্তত ১০ হাজার চাষি। তিনি জানান, অতিরোদ ও অতিবৃষ্টিতে সবজি ও চারার ক্ষতি হয়। পোকার উপদ্রব বাড়ে। মুগারঝোর এলাকার চাষি ফেরদাউস হাওলাদার জানান, উত্তরে মাদারীপুর থেকে পিরোজপুরসহ দক্ষিণে বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, ভোলা ও বরিশালের বিভিন্ন গ্রামে যায় উৎপাদিত চারা। সবজি সরবরাহ করা হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। নাজিরপুরের তালতলা নদীর ওপর দীর্ঘ সেতু হওয়ায় সবজি পরিবহন সহজ হয়েছে।
তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা তেমন সুবিধা করতে পারছেন না। ভাসমান চাষ পদ্ধতি টিকিয়ে রাখতে স্বল্প সুদে ঋণ পেতে সরকারি সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন চাষিরা। মুগারজোর এলাকার ভাসমান সবজি চাষি মো. রহুল আমীনের কথায়, ‘ভাসমান সবজি চাষ বর্তমানে অনেক ব্যয়বহুল। আমরা সরকারি কোনও সহযোগিতা পাই না। এ কারণে বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও’র কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে চাষ করতে হচ্ছে।’ পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বাংলা ট্রিবিউনকে শোনালেন আশার কথা, ‘ভাসমান চাষ পদ্ধতির উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। আমরা মনে করছি, ভালো প্রশিক্ষণ পেলে চাষিদের আয় বৃদ্ধি হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com